বৃষ্টির গান


বৃষ্টির গান

জ সকালে বেশ অনেকক্ষণ একনাগাড়ে বৃষ্টি হচ্ছিল। বৃষ্টির গান আমার বরাবর ভালো'ই লাগে।মা'কে দেখতাম বৃষ্টি নামলে চাল ভাজা-বুট ভাজা,

কাঁঠালের দানা ভাজা, সরিষার তেল দিয়ে বেশ ঝাল করে  মেখে পেয়ালাটা সামনে দিত।খেতে দারুন লাগতো । আর দুপুরের মেনুতে থাকতো ভোনা খিচুড়ি, সংগে ঝাল করে কষানো গরুর লোভনীয় মাংস।সে দিন নেই। - তবে বৃষ্টিটা রয়েছে।

আজকের বৃষ্টি অবশ্যি ,ঠিক মুষলধারায় নয়,বেশ ঢিমা  তালে'ই হচ্ছিল,মাঝে মধ্যে তাল কেটেও যাচ্ছিল। রিমঝিম রিমঝিম সুরটা বেশ ভালো লাগছিলো।কিন্তু রাস্তা ঘাট পানিতে থৈ থৈ করছে, যেন বন্যার পানি।-হবে না,ড্রেনগুলো ময়লায় ভরা। এক তলা বাড়ির ঘরগুলোতে পানি ঢুকেছে, অনেকের বাড়ির রিজার্ভ ট্র্যাংকিতে ময়লা ড্রেনের এমনকি সোয়ালেছের পানিও ঢুকেছে। বাচ্চাগুলো ঐ ময়লা পানিতে মহা আনন্দে খেলছে। অভিভাবক নীরব। 




আমার বাড়ির সামনের রাস্তায় প্রায় কোমর পানি। ময়লা পানি ,ট্যাংকিতে ঢুকে যাবার কারণে, মানুষ খাবার পানির সংকটে পড়েছে। আমার বাড়ির ছাদেও হাড়ি,পাতিল,ঘটি-বাটি জগ-মগ বালতিতে সয়লাব । 

অনেক আগে ঢাকা ওয়ানে যেমনটি দেখতাম, রাস্তার ধারের ওয়াসার কল গুলোতে যে রকম কলসি ,বালতি সিরিয়াল দেখতাম,পানির সিরিয়াল নিয়ে রিতিমত, ঝগড়া চুলাচুলি সহ নানা ঝামেলাও  দেখেছি। না -না আমার বাড়ির ছাদে সে সব হয় নি। ভাড়াটিয়াদের ঘরে কোন হাড়ি-পাতিল জগ-মগ কলসি মনে হয় আর অবশিষ্ট নেই ,সব আজ আমার ছাদে। সব ডাড়াটিয়া ব্যস্ত বৃষ্টির পানি সংগ্রহে। কারন কোমড় পানি ভেংগে ,অন্য জায়গা হতে পানি আনা সম্ভব নয়, তাই  বৃষ্টির পানি আমাদের একমাত্র ভরসা।  

আজকের এই অত্যাধুনিক যুগে মধ্য যুগীয় কায়দায় পানি  সংগ্রহ , আনেকের বিশ্বাসে ধাক্কা লাগতে পারে, ডিজিটাল বাংলা দেশের নাগরিকদের এই করুন দশা ভাবা য়ায় ? -কিন্তু,এটাই বাস্তবতা। 


Next Post
No Comment
Add Comment
comment url

I